ইবনে নাজ্জার রহ. 'যাইলু তরিখি বাগদাদ' গ্রন্থে (৩/২৫৩-২৫৫) বর্ণনা করেছেন যে, ইবনে সিরীন রহ. বলেছেন, আমরা ‘নাহরে তাইরী’তে অবতরণ করলাম। সেখানকার লোকেরা আমাদেরকে বলল, তোমরা চলে যাও কেননা এখানে যারাই অবস্থান করেছে তাদের মাল ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। আমার সকল সাথী চলে গেল।
কিন্তু আমি হযরত ইবনে উমর রা. এর সূত্রে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত হাদীসটির কারণে থেকে গেলাম।
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতের বেলা তেত্রিশ আয়াত পড়বে তাকে কোনো হিংস্র জন্তু অথবা আগন্তুক চোর ক্ষতি করতে পারবে না। আর সকাল পর্যন্ত তাকে এবং তার পরিবার-পরিজন এবং তার মালকে রক্ষা করা হবে।
রাতের বেলা আমি ঘুমালাম না। আমি দেখতে পেলাম, তারা ত্রিশ বারেরও বেশি তলোয়ার খাপমুক্ত করে এসেছে কিন্তু আমার কাছে পৌঁছতে পারে নি।
সকালবেলা আমি চলতে শুরু করলাম, তখন তাদের এক সর্দার আমার সাথে সাক্ষাৎ করে বলল, তুমি মানুষ না জিন। আমি বললাম মানুষ। সে বলল আমরা সত্তরবারের বেশি তোমার কাছে আসলাম, যখনই এসেছি তোমার এবং আমাদের মাঝে লোহার একটি দেয়াল বাধা হয়ে দাড়িয়ছে। আমি তাকে উপরোক্ত হাদীসটি শুনালাম।
অপর এক বর্ননায় ইবনে সীরীন বলেন, আমি এই হাদীস সম্পর্কে শুআইব ইবনে হারবকে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি বললেন, আমরা এটাকে ‘আয়াতুল হিরয’ বলি। বলা হয়, এতে একশত অসুখ থেকে মুক্তি রয়েছে। এরপর তিনি এগুলোর মধ্যে পাগলামী, কোষ্ঠরোগ ইত্যদির কথা উল্লেখ করলেন।’’
মুহাম্মদ বিন আলী বলেন, আমাদের এক শায়খের অর্ধাঙ্গ হলে আমি তা পাঠ করলাম। আল্লাহ তাআলা এর উসিলায় তার রোগ দূর করে দিলেন। (যাইলু তরিখি বাগদাদ, ইবনে নাজ্জার,: ৩/২৫৩-২৫৫ আদ দুররুল মানছুর, সুয়ুতী: ১/১৫০-১৫২)
উপরে হযরত ইবনে উমরা. থেকে যে হাদীস বর্ণিত হয়েছে সনদের বিচারে হাদীসটি দুর্বল। তবে ফযীলত বর্ণনার ক্ষেত্রে যেহেতু মুহাদ্দিসীনে কেরামের দিদ্ধান্ত অনুযায়ী কিছু শর্ত সাপেক্ষে দুর্বল হাদীস গ্রহণযোগ্য। তাই উক্ত হাদীসের উপর আমল করতে কোনো অসুবিধা নেই।
তেত্রিশ আয়াত বা আয়াতুল হিরয অথবা আয়াতুল হারব এর ফযীলত সম্পর্কে এতটুই পাওয়া যায়।
এছাড়া অভিজ্ঞতার আলোকেও এর অনেক উপকারিতা প্রত্যক্ষ করা গেছে। যেমন আমালে কোরআনী গ্রন্থে আছে এগুলো যথারীত পাঠ করলে যাদু-টুনা, ভূত, দেও-দানব, চুর-ডাকাত, এবং সকল প্রকার আপদ-বিপদ দূর হয়।
তাছাড়া এই তেত্রিশ আয়াতের মধ্যে আয়াতুল কুরসীও রয়েছে। রাতে শয়তানের আক্রমন থেকে বাঁচার জন্য নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা পাঠ করার কথা বলেছেন, যা সহীহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। সুতরাং শয়তান, জিন, যাদুটুনা ইত্যাদি থেকে রক্ষার জন্য এটি পড়তে কোন অসুবিধা নেই।